সভাপতি পরিচিতি
চট্টগ্রাম জেলার চন্দনাইশ উপজেলার অন্যতম একটি গ্রাম সাতবাড়ীয়া। এ গ্রামেই ঢাকাস্থ আজিমপুর ছোট দায়রা শরীফ এর ৬ষ্ঠ গদ্দীনশীন পীর সাহেব হয়রত শাহছুফী মাওলানা সৈয়দ দায়েম উল্লাহ (রা:) প্রতিষ্ঠা করেন সাতবাড়ীয়া শাহ আমানত (রাঃ) দাখিল মাদ্রাসা। তাঁর অক্লান্ত শ্রম, মেধা, সততা, সুনিপুন হাতের ছোঁয়ায় এ মাদ্রাসার ঐতিহ্য সুনাম গড়ে উঠেছে।
আশির দশকের মধ্যভাগে সাতবাড়ীয়া এলাকার গরীব-অসহায়, এতিম-দুস্থদের কল্যাণে প্রতিষ্ঠা করেন একটি এতিমখানা। নামকরণ করেন সাতবাড়ীয়া শাহ আমানত (রাঃ) এতিমখানা (শিশুসদন)। এতিমখানা প্রতিষ্ঠার পর তিনি আহলে সুন্নাত ওয়াল জামাত এর মতাদর্শের ভিত্তিতে একটি দ্বীনি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গড়ার প্রয়োজনীয়তা অনুভব করলেন। অবশেষে অত্র এলাকার পিছিয়ে পড়া প্রান্তিক জনগোষ্ঠীকে সুশিক্ষায় শিক্ষিত করার মহৎ প্রয়াসে ১৯৮৪ সালে আপামর জনসাধারণকে সম্পৃক্ত করে প্রতিষ্ঠা করেন সাতবাড়ীয়া শাহ আমানত (রাঃ) দাখিল মাদ্রাসা।
১৯৯৫ সালে হযরত শাহছুফী মাওলানা সৈয়দ দায়েম উল্লাহ (রাঃ) ইন্তেকালের পর তাঁর স্থলাভিষিক্ত হন হযরতুলহাজ্ব মাওলানা শাহছুফী সৈয়দ ফয়েজি মোহাম্মদী আহমদ উল্লাহ (মা.জি.আ.)। যিনি হযরত শাহছুফী মাওলানা সৈয়দ দায়েম উল্লাহ (রাঃ) এর সুযোগ্য নাতী ও খলিফা। বর্তমান আজিমপুর ছোট দায়রা শরীফ, ঢাকা এর ৭ম গদ্দীনশীন। হযরতুলহাজ্ব শাহছুফী মাওলানা সৈয়দ ফয়েজি মোহাম্মদী আহমদ উল্লাহ (মা.জি.আ.) তাঁর নানাজান হযরত শাহছুফী মাওলানা সৈয়দ দায়েম উল্লাহ (রাঃ) এর ইন্তেকালের পর আজিমপুর ছোট দায়রা শরীফের ৭ম গদ্দীনশীন হিসেবে স্থলাভিষিক্ত হয়েই তাঁর নানাজানের প্রতিষ্ঠা করা বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান উন্নত করার ব্রত নিয়ে পরিচালনার দায়িত্ব নেন। তিনি দায়িত্ব নেয়ার পর মাদ্রাসার লেখাপড়া ও অবকাঠামো উন্নয়নে মনোনিবেশ করেন। সাথে সাথে অসহায়,এতিম শিশুদের থাকার জন্য তাঁরই নুরানী হাতে প্রতিষ্ঠিত দায়েমী ফাউন্ডেশনের মাধ্যমে আলাদা দ্বিতল এতিমখানা ভবণ নির্মাণ করেন।
মাদ্রাসার হেফজখানাও আধুনিকায়নে মনোনিবেশ করেন। ফলে সেখান থেকে প্রতিবছর ছাত্ররা কোরান শরীফ হেফজ (মুখস্থ) করে পাগড়ী নিয়ে বের হচ্ছে।তিনি বিভিন্ন সময়ে নিজ থেকে এবং দায়েমী ফাউন্ডেশনের মাধ্যমে এতিমখানা,মাদ্রাসায় অনুদান প্রদান করেন। বর্তমানে প্রতিমাসে মাদ্রাসা-এতিমখানায় দায়েমী ফাউন্ডেশন থেকে অনুদান হিসেবে অর্থ প্রদান করা হয়।এছাড়া হুজুর কেবলা (মা.জি.আ.) নিজস্ব অর্থায়নে মাদ্রাসার জন্য ইতিমধ্যে একটি পাঁচতলা ভবন নির্মাণ করার পরিকল্পনা গ্রহণ করেছেন। নিজ অর্থায়নে মাদ্রাসার নামে একটি সুদৃশ্য গেইটও (তোরণ) নির্মাণ করেছেন। প্রচার বিমুুুুখ এ মহান ব্যক্তির সুপারিচালনায় এ দ্বীনি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান শুধু চন্দনাইশ উপজেলায় নয়,পুরো চট্টগ্রাম জেলায় ঈর্ষনীয় পর্যায়ে পৌছেছে। চন্দনাইশ উপজেলায় ৩ বার মাদ্রাসা পর্যায়ে সরকারী ভাবে শ্রেষ্ঠ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান হওয়া তাঁর সুপরিচালনার ফসল। তাঁর সুপরিচালনাতেই ২ বার মাদ্রাসা পর্যায়ে চন্দনাইশ উপজেলায় সরকারী ভাবে শ্রেষ্ঠ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান প্রধান, শ্রেষ্ঠ শ্রেণি শিক্ষক, উপজেলাতে শ্রেষ্ঠ ছাত্র- ছাত্রী,কেরাত,হামদ,নাতসহ বিভিন্ন প্রতিযোগিতায় অংশ গ্রহণ করে ১ম, ২য় ও ৩য় স্থান অধিকার করা একমাত্র তাঁর আন্তরিক প্রচেষ্টা ও পরিচালনাতেই অর্জন হয়েছে।
আজ সাতবাড়ীয়া শাহ আমানত (রাঃ) দাখিল মাদ্রাসা চন্দনাইশ উপজেলায় বৃহত্তম মাদ্রাসায় পরিনত হয়েছে। ছাত্র-ছাত্রীর সংখ্যা, শিক্ষার উন্নয়ন, দৃষ্টিনন্দন নয়নাভিরাম প্রাকৃতিক পরিবেশ, মাদ্রাসার পিছনে বিশাল পাকা পুকুর ঘাট সব মিলিয়ে আজ মাদ্রাসাটি এক অনন্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এক অনন্য নজির। এ সব কিছুর জন্য যাকে সশ্রদ্ধ চিত্তে স্মরণ করতে হয়, তিনি হলেন ঢাকাস্থ আজিমপুর ছোট দায়রা শরীফের ৭ম গদ্দীনশীন পীর সাহেব, রাহনুমায়ে শরীয়ত ও তরিকত, হয়রতুলহাজ্ব শাহছুফী সৈয়দ মাওলানা ফয়েজি মোহাম্মদী আহমদ উল্লাহ (মা:জি:আ)। তিনি সদাচারী, বিনয়ী, সাদামনের মানুষ, শিক্ষানুরাগী ও একজন আধ্যাতিক ব্যক্তি। বাল্য অবস্থায় তাঁর নানাজান আজিমপুর ছোট দায়রা শরীফ, ঢাকা এর ৬ষ্ঠ গদ্দীনশীন হযরত শাহছুফী মাওলানা সৈয়দ দায়েম উল্লাহ (রাঃ) তাঁকে খিলাফত দান করে আজিমপুর ছোট দায়রা শরীফ, ঢাকা এর ৭ম গদ্দীনশীন মনোনিত করেন।
তিনি ও তাঁর পরিবার এলাকার ধর্মীয় শিক্ষা বিস্তারে অসামান্য অবদান রাখায় পুরো এলাকাবাসী আজিমপুর ছোট দায়রা শরীফ, ঢাকা এর সমস্ত বুজুর্গানেদ্বীন, আওলাদে পাক সবার প্রতি চির কৃতজ্ঞ।